ঢাকাWednesday , 8 May 2024
  • অন্যান্য

ময়মনসিংহে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ বিষয়ক জন অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

মোঃ জাকির হোসেন
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪ ৬:১১ অপরাহ্ণ । ৮৩ জন
link Copied

তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর মূল লক্ষ্য হলো তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক হিসেবে জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিতকরণ। জনগণ রাষ্ট্রের সকল কর্তৃপক্ষের উপর এই আইন প্রয়োগ করে। কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে এবং দুর্নীতি নিরোধ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠাকল্পে, জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণে এই আইন প্রণীত হয়েছে। জনস্বার্থে প্রতিষ্ঠিত আইনটির বাস্তবায়নে গত এক যুগে বহু ইতিবাচক পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সারা দেশের সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ, তাদের বিকল্প দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও আপিল কর্মকর্তা নিয়োগ, তথ্য কমিশন হতে মতবিনিময় সভা, সেমিনার, জেলা উপজেলা পর্যায়ে অবহিতকরণ সভা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি কার্যক্রম প্রভৃতি। এর ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ বিষয়ক জনঅবহিতকরন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) ময়মনসিংহের তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে তথ্য কমিশন বাংলাদেশ ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ বিষয়ক জনহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য কমিশন বাংলাদেশের প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেক। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তথ্য কমিশনের তথ্য কমিশনার যথাক্রমে শহীদুল ইসলাম ঝিনুক ও মাসুদা ভাট্টি।

প্রধান অতিথি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বার যখন প্রধানমন্ত্রী হন, তখন তিনি তথ্য অধিকার আইন প্রতিষ্ঠিত করেণ। তার ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহ জেলার ১৩ টি উপজেলায় পরিচালকসহ তিনদিন যাবত কাজ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তথ্য অধিকার সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত নয় বলে তথ্য অধিকার সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই জনঅবহিতকরণ সভার আয়োজন। প্রধানমন্ত্রী এই আইনটি পাস করেন জনগণের জন্য এবং সরকারের কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতার জন্য। জনগণের উপর শোষণ, গঞ্জনা-বন্ধনা ও দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে এই আইন তৈরি। ১৪ বছর অতিবাহিত হলেও তথ্য আইনের সুফল এখনো পুরোপুরি পাওয়া যায়নি। ফলাফল সুনিশ্চিত করতে সারা দেশব্যাপী এখনো কাজ করা হচ্ছে।

প্রধান তথ্য কমিশনার আরও বলেন, আইন কর্তৃক নিষিদ্ধ সংবাদ বাদে সকল দপ্তরের তথ্য চাওয়ার অধিকার আছে জনগণের। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনা কর্মকাণ্ডকে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। তিনি সরকারি, বেসরকারি ও এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, সকল তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে এবং তথ্য দিতে দপ্তরসমূহ বাধ্য থাকবে। ওয়েবসাইটে সকল তথ্য আপলোড করতে হবে এবং একজন তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত করতে হবে। একটি দুর্নীতিমুক্ত ও সুন্দর দেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে। ১২৭টি দেশের মধ্যে তথ্য অধিকারে ২৬তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। তথ্য প্রদানে সজাগ আছে বলেই বাংলাদেশ এই মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, গোপনীয়তা রক্ষা করে জনগণের প্রত্যেকটি অলিখিত তথ্য চাওয়ার অধিকার থাকবে। যখনই কর্মকর্তারা সঠিক তথ্য দেবেনা, তখনই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। সারাদেশে জেলা ও উপজেলায় আমাদের কমিটি আছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকার ডেল্টা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে হাত দিয়েছে। এসময় তিনি ভূয়া, অতিরঙ্জিত ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনকারী, গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের দপ্তর প্রধানগণ, তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন প্রদানকারী কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকমন্ডলীগন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধাগণ, জনপ্রতিনিধিগণ, সুশীল সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠান শেষে বিশেষ অতিথিগণ উপস্থিত অতিথিদের নিকট থেকে আসা তথ্য অধিকার সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন।